মিরসরাইয়ে মজুদ করা ৬০ বস্তা সরকারি চাউলসহ আটক ২

বিশেষ প্রতিনিধি (উত্তর জেলা) >>>
উত্তর চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অভিযান চালিয়ে মজুদ করা ৬০ বস্তা সরকারি চাউলসহ দুইজনকে আটক করেছে র‌্যাব- ৭ এর (ফেনী) একটি দল।  গত বুধবার (১৩ মে) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে উপজেলার ১৫ নম্বর ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের ছোটকমলদহ দক্ষিণ ওয়াহেদপুর গ্রামের একটি গোডাউন থেকে চাউলগুউলো উদ্ধার করা হয়েছে।  আটককৃতরা হলো দক্ষিণ ওয়াহেদপুর এলাকার হাফিজুর রহমানের ছেলে নুরুজ্জামান নুরু (৩৮) ও জাকির হোসেনের ছেলে আলাউদ্দিন (২৮)।  আটককৃত নুরুজ্জামান ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য ও ছোটকমলদহ বাজার কমিটির যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।  এই বিষয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
র‌্যাব- ৭ এর (ফেনী) ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মো. নুরুজ্জামান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার (১৩ মে) রাত আনুমানিক ৯ টা ৩০ মিনিটের দিকে চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ওয়াহেদপুর গ্রামে অভিযান পরিচালনা করেছি।  এসময় সরকারি চাউল মজুদ করে রাখার সাথে জড়িত নুরুজ্জামান ও তার সহযোগী আলাউদ্দিনকে আটক করেছি।  এরপর নুরুজ্জামানের বাড়ির সামনে অবস্থিত গোডাউন থেকে ৬০ বস্তা চাউল উদ্ধার করা হয়েছে।  উদ্ধারকৃত চাউলের পরিমান ১ হাজার ৫৮৩ কেজি।
তিনি আরো বলেন, কিছু চাউলের বস্তায় সরকারি দপ্তরের সিল রয়েছে। বেশির ভাগ চাউলের বস্তা পরিবর্তন করে আগুনে পুড়িয়ে ফেলেছে বলে স্বীকার করেন আটককৃত নুরুজ্জামান।  চাউলগুলো সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নাকি জনপ্রতিনিধির থেকে নেয়া হয়েছে কিনা তা আমরা খতিয়ে দেখছি।  প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নুরুজ্জামান চাউল ছাড়াও বিভিন্ন পণ্যলুটের সাথে জড়িত রয়েছে।  চালকদের সাথে আঁতাত করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলাচল করা বিভিন্ন গাড়ি থেকে রড, সয়াবিন তেল, ডাল, চিনিসহ বিভিন্ন পণ্য লুট করে তারা।  এছাড়া চোরাই তেল ও পেট্রোল ব্যবসার সাথেও জড়িত বলে নুরুজ্জামান র‌্যাবের কাছে স্বীকার করেছে।  এই ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।
মিরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ বিপুল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, চাউল উদ্ধার ও আটকের বিষয়টি শুনেছি।  তবে র‌্যাব আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু বলেনি।
                                                     কে এই নুরুজ্জামান?

আ’লীগ নেতা নুরুজ্জামান।

এক সময় কোনো পদ-পদবীতে না থাকলেও নুরুজ্জামান বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল।  ২০১২ সালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন নুরুজ্জামান।  এরপর থেকে কমলদহ এলাকায় গাড়ি থেকে বিভিন্ন পণ্য লুট করার কাজ শুরু করেন।  এ কাজের জন্য তার একটি সিন্ডিকেট রয়েছে।  শুধু তাই নয়, তিনি এলাকায় পুলিশের সোর্স হিসেবেও কাজ করেন।  মানুষকে বিভিন্ন সময় হয়রানি করেন।  মামলার ভয়ে মানুষ কিছু বলতে সাহস করেন না।  তিনি সরকারি চাউলসহ আটক হওয়ায় এলাকার মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে বলে স্থানীয়রা জানান।

ডিসি/এসআইকে/এমকেএম