কাপ্তাই থানার অভিযানে কথিত অপহৃত ছাত্রীকে খাগড়াছড়ি থেকে উদ্ধার

কথিত অপহরণ ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করে কাপ্তাই থানা পুলিশ।

মাহফুজ আলম, কাপ্তাই প্রতিনিধি >>>
কাপ্তাই থেকে কথিত অপহৃত এক ছাত্রীকে উদ্ধার করেছে পার্বত্য জেলা রাঙামাটির কাপ্তাই থানা পুলিশ।  থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে কথিত অপহরণের অভিযোগে ২৩ বছর বয়সী ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করা হয়।  গতকাল বুধবার (২২ জুলাই) সকালে খাগড়াছড়ি জেলার মাহ্লা চিং মারমা নামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া ওই শিক্ষার্থী অনার্সের শিক্ষার্থী।  তবে ওই শিক্ষার্থী অপহৃত হননি বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে।  তারা জানান- এটি প্রেমঘটিত বিষয়। 
পুলিশ জানিয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুনায়েত কাউছার ও কাপ্তাই থানার অফিসার ইনচার্জ নাসির উদ্দীনের নির্দেশে ওসি (তদন্ত) মো. আতিকুল ইসলাম, এস আই শফিকুল ইসলাম, এস আই সৈয়দ মনিরু জ্জামানসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে প্রথমে চট্টগ্রামে অভিযান চালানো হয়।  সেখান থেকে ঈমাম হোসেন সুমন ড্রাইভার (৩০) নামের তথাকথিত প্রেমিককে আটক করা হয়।  পরে তার স্বীকারোক্তি এবং তথ্যের ভিত্তিতে খাগড়াছড়ির একটি বাড়ি থেকে ছাত্রী সুইমাথুই মারমাকে উদ্ধার করে।
জানা গেছে, পার্বত্য জেলা রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ৫ নম্বর ওয়াগ্গা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কুকিমারা মারমা গ্রাম থেকে গত মার্চ মাসে নিরুদ্দেশ হন উদ্ধারকৃত ছাত্রী সুইমাথুই মারমা (২৩)।  ঘটনার প্রেক্ষাপটে গত ৬ জুলাই প্রভা দেবী চাকমা (৬০) নামের এক নারী কুকিমারা এলাকায় বৌদ্ধ মন্দিরে ধর্মীয়যজ্ঞে গেলে তাকে সন্দেহ করে অপহৃত মেয়ের পরিবার ও এলাকাবাসী।  এ জন্য ওই সন্দেহভাজন নারীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তারা।  পরে ওই দিনই তারা প্রভা দেবীকে কাপ্তাই থানায় সোপর্দ করেন।  মেয়ের বাবা অংসুইপ্রু বাদী হয়ে পরের দিন ৭ জুলাই কাপ্তাই থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।  অভিযোগের ভিত্তিতে পিডিবির অবসরপ্রাপ্ত এক নারী কর্মকর্তাকেও আটক করে কাপ্তাই থানা পুলিশ।  এরপর ৮ জুলাই (বুধবার) আটককৃত নারীকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রাঙামাটি জেলা আদালতে প্রেরণ করা হয়।
অপহৃত মেয়ের বাবা ও মামলার বাদী অংসুপ্রু তখন দৈনিক চট্টগ্রামকে জানিয়েছিলেন, ‘আমার মেয়ে সুইমাইথুই মারমা (২৩) রাঙামাটি সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বষের্র ছাত্রী।  সে গত ২২ মার্চ কাপ্তাইয়ের বড়ইছড়িতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি।  এ বিষয়ে আমি কাপ্তাই থানায় ২৫ মার্চ নিখোঁজ সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়েরি করি (নম্বর- ৮৯৩, তারিখ ২৫/৩/২০২০ইং)।  এরপর বিভিন্ন সময়ে শুভ মারমা (৩৫) ও প্রভা দেবী চাকমা (৬০) নামের দুইজনকে কিছু দিন পর পর কুকিমারা বৌদ্ধবিহারে ও আমার বাড়িতে আসা-যাওয়া লক্ষ্য করি।  পরে আমাদের সন্দেহ হওয়ায় আমার মেয়ে নিখোঁজ সংক্রান্ত বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে গত ৭ জুলাই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি’।
কাপ্তাই থানার ওসি (তদন্ত) ও মামলার আইও মো. আতিকুল ইসলাম দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, মেয়ের বাবা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নম্বর ১, তারিখ ৭ জুলাই ২০২০ইং)।  পরে আমরা ওই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রভা দেবী চাকমাকে আটকপূর্বক দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ৮ জুলাই (বুধবার) বেলা ১২ টায় রাঙামাটি জেলা জজ আদালতে সোপর্দ করি।
তবে, প্রভা দেবী চাকমা দৈনিক চট্টগ্রামকে জানিয়েছেন, তিনি রাঙামাটি পিডিবিতে হিসাব সহকারী পদে চাকুরি করতেন।  বর্তমানে তিনি অবসরে আছেন।  অপহরণের অভিযোগের বিষয়ে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবী করে বলেন, সরলতার কারণে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি।

ডিসি/এসআইকে/এমএ