বরিশালকাণ্ডে সমঝোতা

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর সঙ্গে বিভাগীয় কমিশনারের বৈঠকের পর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাঝে স্বস্তি নেমে এসেছে। সাধারণ মানুষও খুশি এ বৈঠকে।
গত বুধবার রাতের ঘটনার পর থেকে নগরের বেশকিছু দোকানপাট বন্ধ থাকলেও সোমবার (২৩ আগস্ট) সকালে নগরীর চকবাজার, বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক, গির্জা মহল্লা, কাঠপট্টি, বাংলাবাজার, নতুন বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায় আবার স্বাভাবিক কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। কাজে ফিরেছেন সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও।
নগরীর বাংলাবাজারের ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, বুধবার রাতে সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে আনসারদের ছোড়া গুলিতে মেয়রসহ ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাই। ইউএনওর বাসভবনে হামলার সময় গুলিও ছোড়া হয়। রাতভর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সবার মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। বৃহস্পতিবার আর শুক্রবার নগরীর অধিকাংশ ব্যবসায়ী ভয়ে দোকান খোলেনি।
নথুল্লাবাদের চা দোকানি মো. হাবিব বলেন, পুরা শহর অচল হইয়া গেছিল। ময়লা পরিষ্কার হয় নাই অনেকদিন। রাস্তায়ই বাইরাইন্না যাইত না। আতঙ্ক তো আছিলই, লগে আছিল দুর্গন্ধ। হুনছি মিটিং হইছে মিচুয়ালে। তাড়াতাড়ি মিটমাট হওয়া ভালো। পরে এই ময়লা পরিষ্কার করা হইছে।
নবগ্রাম রোডের সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মো. মামুন বলেন, বৃহস্পতিবার হইতে রোববার পর্যন্ত গাড়িই বাইর করি নাই গ্যারেজ দিয়া। তয় আইজ হইতে নামছি। হুনছি মেয়র স্যারের লগে সব ঝামেলা শেষ করছে। যাই হোক এইরহম পরিস্থিতি মোরা আর চাই না। এহন যদি সবাই মিল্লা কাম করতে পারে তাইলে মোরা শান্তিতে থাকমু, আর মোগো বরিশালেরও উন্নতি হইবে।
বুধবার রাতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে শোক দিবসের ব্যানার খোলা নিয়ে ইউএনও মুনিবুর রহমানের বাসভবনে হামলা হয়। ওই সময় সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর আনসার সদস্যদের গুলি ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। সংঘর্ষ হয় পুলিশের সঙ্গেও। এতে মেয়র ও প্যানেল মেয়রসহ ৩০ জন আহত হন।
ওই ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই এবং ইউএনওর করা দুই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে। মামলার মোট আসামি ৬০২ জন, তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে ইউএনওকে আসামি করে দুটি মামলার আবেদন করেন প্যানেল মেয়র ও সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা।
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ.কে.এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সমঝোতা বৈঠক রোববার রাত সোয়া ৯টায় শুরু হয়। মেয়র, প্যানেল মেয়র, বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাসহ অনেকে ছিলেন। বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে বরিশাল-১ আসনের এমপি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর কথা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা একটি সুষ্ঠু সমাধানে পৌঁছেছি। আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো হয়েছে সেগুলো প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া ভুল বোঝাবুঝি উভয়পক্ষের মধ্যে ছিল। ত্রুটি আমাদেরও কম ছিল না। এর বেশি বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ