দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
চট্টগ্রাম শহরের মুরাদপুর এলাকার একটি ড্রেনে পা পিছলে পড়ে নিখোঁজ সবজি বিক্রেতা সালেহ আহমেদ (৫০) ও আগ্রাবাদ মাজার গেট এলাকার খোলা ড্রেনে পা ফসকে পড়ে নিখোঁজের পর মারা যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী সেহরীন মাহবুব সাদিয়ার (১৯) পরিবারকে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনকে বিবাদী করা হয়েছে লিগ্যাল নোটিশে।
এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে সিসিবি ফাউন্ডেশনের পক্ষে মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. আব্দুল হালিম ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান সংশ্লিষ্টদের প্রতি এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্যারিস্টার মো. আব্দুল হালিম বলেন, এ বিষয়ে নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এর আইনি প্রতিকার চেয়ে উচ্চ আদালত হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হবে।
আইনজীবী মো. আব্দুল হালিম বলেন, নোটিশে সালেহ আহমেদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী সেহরীন মাহবুব সাদিয়া ড্রেনে পড়ে মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তা জানাতে বলা হয়েছে। ড্রেনে পড়ে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা রোধে সংশ্লিষ্ট বিবাদীরা তদন্ত করেছেন কিনা, ক্ষতিপূরণের বিষয়ে বা অন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন কিনা তারও একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করতে বলা হয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ মাজার গেট ও আগ্রাবাদ মোড়ের মাঝামাঝি এলাকায় ডায়মন্ড রেস্টুরেন্টের বিপরীত পাশের খোলা ড্রেনে পা ফসকে পড়ে নিখোঁজ হন চট্টগ্রামের ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের স্নাতক প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী সেহরীন মাহবুব সাদিয়া। গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে এক আত্মীয়সহ চশমা কিনে বাসায় ফেরার পথে ড্রেনে পড়ে নিখোঁজ হন তিনি। এর পাঁচ ঘণ্টা পরে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
তারও আগে ২৫ আগস্ট ৫০ বছর বয়সী সবজি বিক্রেতা সালেহ আহমেদ শহরের মুরাদপুর এলাকার একটি ড্রেনে পা পিছলে পড়ে যান। দমকলকর্মীরা তিনদিন উদ্ধারপ্রচেষ্টা চালিয়েও তার মরদেহ খুঁজে পাননি। এরপর তারা উদ্ধার কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। তার আগে গত ৩০ জুন ষোলশহর চশমা হিল এলাকাতেও এমন দুর্ঘটনায় মারা যান দুজন।
চট্টগ্রামে নালায় পড়ে মৃত্যু: দায় কার? এই শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সবজি ব্যবসায়ী সালেহ আহমদের পর চট্টগ্রাম নগরীতে নালায় পড়ে সেহরীন মাহবুব সাদিয়ার মৃত্যুতেও দায় নিতে চাইছে না সিটি কর্পোরেশন কিংবা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ।
সরকারি দুটি সংস্থাই একে অন্যকে দোষ দিচ্ছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন বলছে, দুদিকে ফুটপাত করলেও খালের মুখটি অরক্ষিত রেখেছে সিডিএ। তাই এর দায় সিডিএর। অন্যদিকে, সিডিএ বলছে, খালের মালিকানা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের। তাই খালের মুখে সুরক্ষা নিশ্চিতের দায়িত্বও তাদের।
এদিকে, নালা-খালে একের পর এক মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ নগরবাসী। তারা বলছেন, দায় এড়ানোর এই প্রবণতা প্রমাণ করে সেবা সংস্থার মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো স্বাচ্ছন্দ্যের পরিবর্তে নগরবাসীর ‘মৃত্যুফাঁদে’ পরিণত হয়েছে।
ডিসি/এসআইকে/আরএআর