গ্যাসচালিত গাড়িতে থাকবে সবুজ স্টিকার

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
ডিজেলের দাম বাড়ানোর পর শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে ভাড়া বৃদ্ধির নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। শুধু ডিজেলচালিত যানবাহনে এ নির্দেশনা দেওয়া হলেও বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গ্যাসচালিত বিভিন্ন গাড়ির চালক-হেলপারদের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ ওঠার পর বুধবার (১০ নভেম্বর) জরুরি সমন্বয় সভা করে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। এতে নগরে চলাচল করা ডিজেলচালিত গণপরিবহনে লাল এবং গ্যাসচালিত গাড়িতে সবুজ স্টিকার লাগানোর নির্দেশনা দেন সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর। আগামি শনিবারের মধ্যে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে পরিবহন মালিকদের বলা হয়।
বৈঠকে অংশ নেওয়া পরিবহন মালিক নেতা মো. শাহজাহান জাগো নিউজকে বলেন, কিছু কিছু শ্রমিকদের যাত্রী-হয়রানির মনোভাবের কারণে আমরা মালিকরা অনেক সময় লজ্জিত হই। গ্যাসচালিত গাড়ির ড্রাইভাররা মালিকরা পূর্বে যে ভাড়া দিতেন, বর্তমানেও তা দিচ্ছে। অথচ কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া বাড়িয়ে নিচ্ছেন। বুধবারের বৈঠকে যাত্রীদের এ হয়রানি থেকে বাঁচাতে নগরে চলাচল করা ডিজেলচালিত গণপরিবহনে লাল এবং গ্যাসচালিত গাড়িতে সবুজ স্টিকার লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিএমপি কমিশনারের সভাপতিত্বে সমন্বয় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ, অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মো. শামসুল আলম এবং বিআরটিএ, বাসমালিক ও শ্রমিক নেতারা।
এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্যাসচালিত গাড়ি হয়েও যখন অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে, তখন চট্টগ্রামের কয়েকটি গাড়িতে দেখা গেছে উল্টো চিত্র। যেখানে গাড়ির মালিক নিজেই লিখে দিয়েছেন, ‌‘শ্রদ্ধেয় যাত্রী ভাই, গ্যাসের গাড়ি বাড়তি ভাড়া দিবেন না’। কাগজে লেখা ওই স্টিকারে মালিকের একটি নম্বরও লিখে দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই গাড়ির মালিকের নাম শামসুল আলম বাবুল। ফটিকছড়ির এই বাসিন্দা বর্তমানে পরিবার নিয়ে থাকেন নগরের বাকলিয়া থানার কালামিয়া বাজার ইসাকের পুল এলাকায়। নগরের চার নম্বর রোড অর্থাৎ দেওয়ানহাট-নতুন ব্রিজ রোডে তার গাড়ি চলে মোট ছয়টি। এগুলো হলো- চট্টমেট্রো চ ৩৫৫৫, চট্টমেট্রো চ ৩৪৮২, চট্টমেট্রো চ ২৩৮২, চট্টমেট্রো চ ৪১৫৪, চট্টমেট্রো জ ১০৭৭ এবং চট্টমেট্রো জ ১৯৯৯। গ্যাসচালিত এসব গাড়িতে তিনি স্টিকারগুলো লাগিয়ে দেন।
ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে শামসুল আলম জানান, গতকাল (মঙ্গলবার) তার গাড়ির ড্রাইভার যাত্রীদের সঙ্গে বাড়তি ভাড়া নিয়ে একাধিকবার বিবাদে জড়িয়েছেন। এরপর যাত্রীদের হয়রানির কথা চিন্তা করে ওইদিন রাতেই তিনি স্টিকারগুলো লাগিয়ে দেন। যাতে যাত্রীরা গাড়িতে ওঠার আগেই ভাড়া সম্পর্কে সচেতন হন।
তিনি বলেন, আমার গাড়িগুলো দৈনিক ১ হাজার ৮০০ টাকা করে ভাড়া দেন। গ্যাসচালিত এসব গাড়িতে তেলের দাম বৃদ্ধির কোনো প্রভাব পড়েনি। আমি আগের ভাড়াই নিচ্ছি। অথচ ড্রাইভাররা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন বলে আমি অভিযোগ পেয়েছি। যার কারণে এ উদ্যোগ নিয়েছি।
জানা গেছে, গত বুধবার (৩ নভেম্বর) মধ্যরাত থেকে ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বৃদ্ধি করেছে সরকার। এ নিয়ে পরদিন বৃহস্পতিবার পরিবহন খাতের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সারাদেশে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। এরপর রোববার থেকে ডিজেলচালিত গাড়িতে ২৭ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর প্রেক্ষাপটে সারাদেশে যাত্রীবাহী বাস চলাচল শুরু হয়।
ডিসি/এসআইকে/আরসি