চন্দনাইশ-বোয়ালখালীতে ৭ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ১৫ জনকে জরিমানা

উত্তর চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলার করলঙ্গো, সরোয়াতলী ও চরণদ্বীপ এবং ও চন্দনাইশ উপজেলার হাশিমপুর ও সদর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৭ চেয়ারম্যান প্রার্থী, ৪ সদস্য প্রার্থী এবং ৪ ব্যবসায়ীকে ৩৮ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) চন্দনাইশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহফুজা জেরিন এবং বোয়ালখালী উপজেলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিনা আকতার এই অভিযান পরিচালনা করেন।
এছাড়াও নির্বাচন কমিশন থেকে এলাকা ছাড়ার চিঠি পেয়েও এলাকা না ছাড়া এবং নির্দিষ্ট প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধেও।
জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে চন্দনাইশ উপজেলার হাশিমপুর ও সদর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৫ চেয়ারম্যান প্রার্থী, ২ সদস্য প্রার্থী, ৪ ব্যবসায়ীকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী পরিচালনা (ভূমি) মাহফুজা জেরিন।
অন্যদিকে একইদিন বোয়ালখালী উপজেলার চরণদ্বীপ, সারোয়াতলী ও করলডেঙ্গায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিনা আকতার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ২ চেয়ারম্যানপ্রার্থী ও ২ মেম্বারপ্রার্থীকে মোট ২৩ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
জানা গেছে, চন্দনাইশের সদর ও হাশিমপুর এলাকায় অতিরিক্ত ব্যানার টাঙানোর অপরাধে হাশিপুরের নৌকার প্রার্থী অ্যাড. খোরশেদ বিন ইছহাককে ৩ হাজার, বিদ্রোহী প্রার্থী যথাক্রমে বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীরুল ইসলাম চৌধুরীকে (চশমা) ৫ হাজার, চৌধুরী আমির মো. সাইফুদ্দীনকে (ঘোড়া) ২ হাজার, স্বতন্ত্র প্রার্থী জসিম উদ্দীনকে (অটো রিক্সা) ১ হাজার, এলডিপি সমর্থিত মোজাম্মেল হককে (আনারস) ৩ হাজার, হাশিমপুরের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী আবদুস ছবুরকে (টিউবওয়েল) ৫০০, ৫নং ওয়ার্ডের আবু বক্করকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
একইদিন ভোক্তাধিকার আইনে চন্দনাইশ সদরের মুন্না কম্পিউটারের মালিক মো. মুন্নাকে ৫০০, আমির হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের মালিককে ৫০০, আবদুল মুবিনকে ২ হাজার, মুলকতুর রহমানকে ৫০০ টাকাসহ মোট ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অন্যদিকে চরণদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. শামসুল আলম প্রতীক বরাদ্দ না নিয়েই প্রতীক সম্বলিত নির্বাচনী প্রচারণা চালানোয় জরিমানা গুনেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিনা আকতার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাকে এ অর্থদণ্ড দেন। এছাড়া মোটর সাইকেলের শোডাউন দেওয়ায় উপজেলার করলডেঙ্গা ইউপির আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনসুর আহাম্মদ বাবুলকে এবং দেয়ালে পোস্টার সাঁটানোয় সারোয়াতলী ইউনিয়নের দুই সাধারণ সদস্য (মেম্বার) প্রার্থীকে জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিনা আকতার বলেন, চরণদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী শামসুল আলমকে প্রতীক বরাদ্দের আগেই প্রতীক নিয়ে প্রচারণা চালানোয়, আহলা করলডেঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী মনছুর আহাম্মদ বাবুল মোটর সাইকেল শোডাউন করায় ও সারোয়াতলীতে দুই সাধারণ সদস্য প্রার্থীকে দেয়ালে পোস্টার সাঁটানোর দায়ে ২৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অন্যদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে (এমপি) নির্বাচনী এলাকা ত্যাগ করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে নির্বাচন কমিশন চিঠি দিলেও তা উপেক্ষা করে নিজ এলাকায় অবস্থান করছেন চট্টগ্রাম- ৮ আসনের সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমদ। তিনি চরণদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার চরণদ্বীপ ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল লতিফের বাড়িতে এক বৈঠকে অংশ নেন তিনি। পরে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে সাংসদ উপজেলা সদরের গোমদন্ডী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে যোগ দেন। বিকেলে তিনি উপজেলা পরিষদ চত্বরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত বিজ্ঞান মেলার সমাপনীতে বক্তব্য রাখেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, এলাকা ত্যাগ করার জন্য ইসির নির্দেশনার চিঠি তাঁর কাছে গত শনিবার পৌঁছানো হয়েছে। এরপরও সাংসদের এলাকায় অবস্থান নেওয়া বিধি পরিপন্থি। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানানো হবে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ