মায়ের সঙ্গে চট্টগ্রাম কারাগারে ৬৩ শিশু

ছবি ইন্টারনেট থেকে

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
সাথী আক্তার (ছদ্মনাম)। মাদক মামলায় গ্রেফতার হয়ে দুই বছরের বেশি সময় ধরে রয়েছেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে।  তার সঙ্গে রয়েছে চার বছরের ছোট্ট শিশু সন্তানটিও।  নিয়ম অনুযায়ী কারাগারের বন্দি তালিকায় সাথীর নাম থাকলেও নাম নেই ছোট্ট শিশুটির।  তার বিরুদ্ধে নেই কোনো অপরাধের অভিযোগও।  তবু দণ্ডিত মায়ের সঙ্গে তার দিন কাটছে কারাগারে।  তবে শুধু সাথী নয়, এমন আরো অনেক নারীই রয়েছেন; যারা দুগ্ধপোষ্য শিশুকে নিয়ে বছরের পর বছর রয়েছেন কারাগারে।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষের তথ্য বলছে, সাথীর শিশুটির মতো এমন আরো ৬৩ নির্দোষ শিশুর শৈশব কাটছে চারদেয়ালে।  এর মধ্যে ছেলে রয়েছে ৩২ জন ও মেয়ে রয়েছে ৩১ জন।  বর্তমানে কারাবন্দির সংখ্যা সাত হাজার ৫১।  যাদের মধ্যে নারী রয়েছেন ৩৩৩ জন।  ৭ হাজার ৫১ জন বন্দির মধ্যে বেশিরভাগই হাজতি।  কয়েদি রয়েছে প্রায় ৭০০ জন।  এর মধ্যে ৮৮ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।  যার মধ্যে নারী রয়েছেন একজন।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সভাপতি আইনজীবী আকতার কবির চৌধুরী বলেন, মহিলা রাইটার, হাজতি ও কয়েদিদের মাঝে বেড়ে ওঠায় কারাগারে থাকা শিশুদের শিশুসুলভ আচরণগুলো লোপ পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।  মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।  কারাগারের ওই পরিবেশ থেকে তাদের সুস্থ পরিবেশে বড় হওয়ার বিকল্প সুযোগ বের করতে হবে।
বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি আইনজীবী জিয়া হাবীব আহসান বলেন, বিনা অপরাধে শিশুর কারাগারে থাকা শিশু অধিকারের লঙ্ঘন।  তাদের পক্ষে কর্তৃপক্ষের গ্রহণযোগ্য ভূমিকা রাখা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, কারাগারে শিশুর বিচরণের জন্য অনুকূল পরিবেশ নেই।  মানবিক বিকাশ একদমই ঘটছে না।
এ বিষয়ে কারাগারের জেলার দেওয়ান তারিকুল ইসলাম বলেন, কারাবিধি অনুযায়ী শিশুদের মায়েদের সঙ্গে রাখা হয়।  ছয় বছরের কম বয়সী শিশুরা এ সুযোগ পায়।  এর বেশি হলে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
কারাগারে থাকা শিশুদের আলাদা যত্নের ব্যবস্থা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একজন শিশুর যা কিছু প্রয়োজন, সবই রয়েছে কারাগারে। হাঁটতে পারে, পড়তে পারে, খেলতেও পারে।  খেলাধুলার সরঞ্জাম রয়েছে।  মায়েরাও তাদের শিশুদের সঙ্গে পর্যাপ্ত সময় কাটাতে পারেন।
তিনি জানান, দিবাযত্ন কেন্দ্রের মাধ্যমে এ সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে এসব শিশুরা। যেমন- বই, আদর্শলিপি, খাতা, কলম, পেনসিল, স্লেট, চক, ছবি আঁকার বোর্ড, বল, রং পেন্সিল ও নানা রকম খেলনা হাতের কাছে পায় তারা।

ডিসি/এসআইকে/আরএআর