রোগী মৃত্যুর ঘটনায় সাউদার্নের তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রামে অপারেশনের দুদিন পর পপি আক্তার নামে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় সাউদার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠনের আদেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-৫ এর বিচারক মো. সাদ্দাম হোসেন এ আদেশ দেন।
অভিযোগে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকার সাউদার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ডা. মোহাম্মদ ইমরান হোসেন (৪৫), সহকারী অধ্যাপক ডা. আদনান বাচা (৪০) ও অধ্যক্ষ ডা. জয়ব্রত দাশকে (৫৫) বিবাদী করা হয়েছে। নিহতের স্বামী নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকার বাসিন্দা মীর আবদুল পিরু বাদী হয়ে অভিযোগটি দেন।
মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল হেলাল জানান, ‘সাউদার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুতে এ অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। গত ১৮ ডিসেম্বর অভিযোগটি দেওয়া হয়। আজ অভিযোগের আদেশ দিয়েছেন আদালত। অভিযোগ আমলে নিয়েছেন। তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধানকে দায়িত্ব দিয়ে তিন সদস্যের কমিটি করে দিয়েছেন। কমিটির অপর দুই সদস্য থাকবেন চমেক হাসপাতালের মেডিসিন ও অ্যানেস্থেশিয়া বিভাগের দুই সহকারী অধ্যাপক। কমিটিকে আগামি ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রতিবেদনের আলোকে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেছেন, আমার স্ত্রী পপি আক্তার গত ২২ অক্টোবর সকালে পেটের ব্যথা অনুভব করলে বাসার পাশের সাউদার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাই। চিকিৎসক হাসপাতালে ভর্তি দেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ব্যথা শনাক্ত করেন এবং অতিদ্রুত অপারেশন করতে বলেন। গত ২৬ অক্টোবর সকাল ৯ টায় রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। তিন ঘণ্টা পর অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করে চার নম্বর ওয়ার্ডে আনা হয়। নিয়ে আসার পর সারাদিন পেটে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করে এবং রক্তপাত হয়। তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে দুই ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়। ওই দিন রাত ১১ টার দিকে পুনরায় তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে দ্বিতীয়বার অপারেশন করা হয়। দ্বিতীয় বার অপারেশনের পর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। অক্সিজেন সাপোর্ট প্রয়োজন হয়, প্রেশার কমে যায় এবং রেসপন্স তেমন একটা ছিল না।
পরদিন ২৭ অক্টোবর সকালে ডিউটি ডাক্তার জানায়, রোগীর শারীরিক অবস্থা খারাপ। তড়িঘড়ি করে ডিসচার্জ করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। দ্রুত পাশে অবস্থিত মেরিন সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৮ অক্টোবর সকাল ৬টা ৫৪ মিনিটে মৃত ঘোষণা করা হয়।

ডিসি/এসআইকে/আরসি