লোহাগাড়ায় পাগলা কুকুরের উপদ্রুপ : তিনদিনে ৫০ নারী-পুরুষ-শিশু আহত

লোহাগাড়া প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
দক্ষিণ চট্টগ্রামের কক্সবাজার লাগোয়া লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নে একটি পাগলা কুকুরের আক্রমণে ৫০ নারী-শিশু-পুরুষ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।  ইউনিয়নটির ছগিরা পাড়া, বাগমুয়া, ফরিয়াদিরকুল, হাসপাতাল গেইট ও পদুয়া বাজার এলাকায় গত তিনদিন ধরে এই ঘটনা ঘটলেও কুকুরটিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা।  আহতদের মধ্যে লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ২১ জন এবং অন্যরা স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতাল ও নিজ নিজ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।  ১৬, ১৭ ও ১৮ আগস্ট পদুয়ায় পাগলা কুকুরের আক্রমণের এসব ঘটনা ঘটে।  পদুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ জহির উদ্দিন ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ হানিফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আহতদের মধ্যে কয়েকজন হলেন উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের বাগমুয়া এলাকার শাহজাহানের ছেলে মুবিন (৫), রাবেয়া খাতুন (৬০), আনোয়ার হোসেনের ৮ বছর বয়সী শিশুকন্যা, ইদ্রিস মেম্বারের ৫৫ বছর বয়সী স্ত্রী, পদুয়া ছগিরা পাড়ার জাকারিয়ার ছেলে মোর্শেদুল আলম (১৬), ওসমান গণির স্ত্রী জন্নাতুল ফেরদৌস (২৯), মো. সজীবের শিশুকন্যা তাহমিনা সুলতানা (৭), ছালেহ আহমদ (৬০), নুরুল ইসলাম ভোলার স্ত্রী ছাবেরা খাতুন (৬০), আহমদুর রহমানের ছেলে অছিয়র রহমান (৫৫), আশরাফ আলীর মেয়ে সেলিনা আক্তার (৩৭), মোজাম্মেলের স্ত্রী (৩৫) ও আব্দুল মোতালেবের ছেলে সাদেক উদ্দীন (২৭)।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ও সহকারী সার্জন নূসরাত জাহান জানান, পাগলা কুকুরের আক্রমণে আহত হয়ে ২১ জন লোক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, গত ৩ দিন ধরে একটি পাগলা কুকুর অজ্ঞাত স্থান থেকে বিদ্যুৎ গতিতে এসে পথচারীদের কাউকে কামড়, আবার কাউকে আঁচড় দিয়ে আবার অজ্ঞাতস্থানে চলে যায়।  গত ১৬ আগস্ট ৮ জন, ১৭ আগস্ট ৫ জন, ১৮ আগস্ট ২০ জনসহ তিন দিনে অন্তত ৫০ জন নারী-শিশুসহ সাধারণ পথচারী এই পাগলা কুকুরের আক্রমণে আহত হয়েছেন।  এদের মধ্যে কেউ কেউ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, স্থানীয় ক্লিনিক ও বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।  স্থানীয়রা আরও জানান, পাগলা কুকুরটি আক্রমণ করে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার কারণে লোকজন তার গতিবিধি লক্ষ্য করতে পারেনি।
স্থানীয় পদুয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জহির উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, হঠাৎ করেই গত তিন দিন ধরে একটি পাগলা কুকুর উপজেলার পদুয়া বাজার এলাকা, হাসপাতাল গেইট, বাগমুয়া, ছগিরা পাড়া, ফরিয়াদিরকুলসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়কে চলাচলরত মানুষজনকে আক্রমণ করে দ্রুত পালিয়ে যায়।  এসব এলাকার অন্তত ৫০ জন লোক কুকুরটির আক্রমণের শিকার হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।  আমি কুকুরটি ধরার চেষ্টা করছি।
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌছিফ আহমদ বলেন, পাগলা কুকুরের আক্রমণের খবরটি আমি শুনেছি।  উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে খুব শীঘ্রই উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিস ও স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে বসে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবো।  তবে, এ মুহুর্তে লোহাগাড়াবাসীকে পাগলা কুকুর থেকে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মাদ হানিফ বলেন, পদুয়ার বিভিন্ন স্থানে পাগলা কুকুরের আক্রমণে আহত হয়ে ২১ জন নারী-পুরুষ ও শিশু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।  এতোদিন আমাদের হাসপাতালে কোনো ভ্যাকসিন বরাদ্দ ছিলো না।  এ ঘটনার পর উপজেলা পরিষদ থেকে কিছু ভ্যাকসিন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আগামি বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) ভ্যাকসিন হাতে পাবো।

ডিসি/এসআইকে/এসইউ