অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
বাংলা একাডেমি আয়োজিত ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৪’ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩ টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী। পরে বিকেল সাড়ে ৪ টায় মেলার উদ্বোধন করেন তিনি।
এসময় তিনি বলেন, পড়ার অভ্যাস সবার থাকা উচিত। ছোটবেলা থেকে বাবা-মা যদি শিখায় সেটি ভালো হয়। অনেকে ঘুমের জন্য ওষুধ খায়, প্রয়োজন নেই। বই পড়লেই ঘুম চলে আসে। বেশি মজাদার বই পড়লে আবার ঘুম আসবে না। এ জন্য আবার বই বাছাই করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে ডিজিটাল ফরমেটে বই পড়ে। ভাষা সাহিত্য এগিয়ে নিতে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। প্রকাশনায় ডিজিটাল ও অডিও মাধ্যম সংযোজন করতে হবে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চললে এগিয়ে যাব। অনুবাদকে সমৃদ্ধ করতে হবে। পড়ার অভ্যাস ছোটবেলা থেকে গড়ে তুলতে হবে। বাংলা সাহিত্যকে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দিতে হবে। অনেক আন্দোলনের সূতিকাগার হচ্ছে বাংলা একাডেমি। বইমেলা বড় জায়গায় কীভাবে আয়োজন করা যায়, তা ভাবার প্রয়োজন আছে।
স্কুল জীবন থেকে বই মেলায় আসতাম। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বইমেলায় এসে মজা নেই। নিরাপত্তার বেড়াজালে স্বাধীনতা হারিয়ে গেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের পর এবার সরকারের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ। তাই ভাষা সাহিত্যসহ সব কিছুকে স্মার্ট করতে হবে।
প্রকাশকদের শুধু কাগজের নয়, ডিজিটাল প্রকাশক হওয়ার অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে ডিজিটাল প্রকাশনার ওপর গুরুত্বও দেন শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেন, লাইব্রেরিগুলোয় অডিও ভার্সন থাকবে, অডিও ভার্সনের কিন্তু প্রয়োজন আছে। সেটাও থাকলে অনেকের সুবিধা, শুনবে জানতে পারবে, সে ব্যবস্থাটাও আমাদের নেওয়া উচিত। এটাই সব থেকে দরকার, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে আমরা এগিয়ে যাব।
এর আগে ২০২৩ সালের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরষ্কার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তিনি। সাহিত্য বিষয়ে অবদানের জন্য ১১টি ক্যাটাগরিতে ১৬ জনকে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হয়। বিকেলে ৩টার দিকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে সাহিত্য বিশেষ অবদানের জন্য ১১টি ক্যাটাগরিতে ১৬ জনকে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলা একাডেমি আয়োজিত এবারের বইমেলার প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘পড়ো বই, গড়ো দেশ: বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ (বই পড়ো, দেশ গড়ো: বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ)’।
জানা যায়, বইমেলায় ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৯৩৭টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাংলা একাডেমি মাঠে ১২০টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৩টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৫১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৬৪টি স্টল বরাদ্দ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ বছর মোট ৩৭টি প্যাভিলিয়নও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গত বছর ৬০১টি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মোট ৯০১টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল।
এবারের বইমেলা অধিবর্ষের বইমেলা। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলা অনুষ্ঠিত হবে। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে রাত ৮টা ৩০ মিনিটের পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না। আর ছুটির দিন বইমেলা চলবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
তবে ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন মেলা সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ