ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
বিশ্বব্যাপি মহামারি রূপে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনা ভাইরাস ইতোমধ্যে বাংলাদেশগে গ্রাস করতে শুরু করেছে। বিশেষত চট্টগ্রাম জেলা এবং নগরে এর ভয়াবহতা চরমে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম নগরে যে ২৫ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে তারমধ্যে শুধুমাত্র আকবরশাহ-পাহাড়তলীতেই রয়েছেন ১৬ জন। এরমধ্যে নগরের আকবরশাহ থানাধীন উত্তর কাট্টলীতেই রয়েছেন একই পরিবারের ৩ জন। ফলে এই অঞ্চলে চাপা আতঙ্ক বিরাজ করলেও কার্যত ঘরে থাকার বিধিনিষেধ মানছেননা এই এলাকার মানুষস। এই পরিস্থিতিতেও অলিতে-গলিতে দাপিয়ে ভাড়া মারছে যাত্রীবাহী সিএনজি অটোরিকশা এবং ব্যাটারিচালিত অবৈধ টমটমও। এসব অটোরিকশায় একসাথে ৫ জন এবং টমটমে একসাথে ৬-৮ জন যাত্রী গাদাগাদি করে যাতায়াত করছেন। এতে করে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিততো দূরের করা, বরং এই অঞ্চলকে অতি ঝুঁকিতে ফেলা হচ্ছে। গায়ের সাথে গা ঘেঁষিয়ে বসা এবং কোনো ধরণের সুরক্ষা সামগ্রীতো দূরের কথা, অনেকের মুখে মাস্ক পর্যন্ত দেখা যায়নি। সারাদেশে সব ধরণের যাত্রীবাহী বাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এই অঞ্চলে এই বিধি-নিষেধের বালাই নেই। এখানকার মানুষগুলো সচেতন হয়েও অরক্ষিতভাবে এসব বাহনে চলাচল যেমন করছেন, তেমনি প্রশাসনের বিধি-নিষেধকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এসব যাত্রীযাহী বাহন কিভাবে চলছে তা নিয়েও এখানকার সচেতন মহল প্রশ্ন রেখেছেন।
জানা গেছে, ইতোমধ্যে উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে একই পরিবারের ৩ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস কোভিড- ১৯ সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তারা সরকারি হেফাজতে থাকলেও লকডাউনে আছে আক্রান্ত ব্যক্তির এলাকার কয়েকটি বাড়ি। অন্যদিকে উত্তর কাট্টলীর পার্শ্ববর্তী উত্তর পাহাড়তলীতে ২ জন, ফৌজদারহাটে ১ জন, দক্ষিণ কাট্টলী এলাকায় ১০ জন এবং সরাইপাড়া ওয়ার্ডস্থ দুলালাবাদে ১ আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানা গেছে। এই পরিস্থিতি প্রশাসন বার বার নাগরিদের ঘরে থাকার কথা বলছেন। কিন্তু কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছে না। এখানকার মানুষজন কারণে-অকারণে বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন, আড্ডা দিচ্ছেন। তার সাথে যুক্ত হয়েছে অদৃশ্য নির্দেশনায় যাত্রীবাহী বাহনের চলাচল। এসব বাহনের কারণে এই অঞ্চলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়েছে কয়েকগুন। এসব বাহনে অন্তত ৭-১৫ মিনিট মানুষজন একে-অপরের একেবারেই সান্নিধ্যে থাকছেন, সংস্পর্শে থাকছেন। ফলে কোভিড- ১৯ সংক্রমণের ঝুঁকিটা বেড়েছে কয়েকগুন।
এই বিষয়ে দৈনিক চট্টগ্রামকে আকবরশাহ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আর কিভাবে করবো বলেন। কত রকম চেষ্টা করছি। সীমিত পুলিশ সদস্য নিয়ে দিন-রাত আমরা চেষ্টা করছি সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে, মানুষকে ঘরে থাকতে উদ্বুদ্ধ করছি। থানা এলাকার অলিতে-গলিতে যাত্রীবাহী অটোরিকশা-টমটম চলাচল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি এখনই এগুলো বন্ধ করার উদ্যোগ নিচ্ছি। তিনি বলেন, আমরা যখন যাই এগুলো থাকে না, সরে আসলেই আবার আগের মতো। এটা আমরা দেখেছি। কিন্তু একই জায়গায় কতক্ষণ এসব রোধ করা যায় বলেন? এ জন্য সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে। তারা ঠিক থাকলেই এসব আর হওয়ার কথা নয়।
ডিসি/এসআইকে/আইএস