রেয়াজউদ্দিন বাজার এখন রেলস্টেশনের পার্কিংয়ে

নগর প্রতিবেদক >>>
নভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড- ১৯) ইতোমধ্যে বাংলাদেশের ৪১৮৬ জনের মধ্যে ছড়িয়ে প্রাণ নিয়েছে ১২৭ নাগরিকের। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞতদের মতে- সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত এবং বাইরে ঘোরাফেরা থেকে বিরত থাকলেই এই মহামারির হাত থেকে রক্ষা পাবেন মানুষ।  তাই বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলের মতোই লকডাউনে আছে বাংলাদেশ।  আর এই ভাইরাস থেকে সবাইকে রক্ষায় সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে নেয়া হচ্ছে নানান উদ্যোগ। ইতোমধ্যে দেশের হাট-বাজারগুলোকে করোনা সংক্রমণের উৎসস্থল বলে চিহ্নিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।  এর প্রমাণ পাওয়া গেছে অনেক।  তাই এসব হাট-বাজারকে বদ্ধ জায়গা থেকে খোলা স্থানে স্থানান্তরের নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ সরকার।  আর এই নির্দেশনার আলোকে ইতোমধ্যে সারাদেশের অসংখ্য বাজারে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে খোলাস্থানে স্থানান্তর করা হয়েছে মানুষের জট লেগে থাকা হাট-বাজারগুলোকে।
এরই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামের সবচাইতে বড় পাইকারি বাজার রেয়াজউদ্দিন বাজার স্থানান্তরিত হতে যাচ্ছে খোলাস্থানে।  আগামিকাল শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) থেকে চট্টগ্রামে সবজির বৃহৎ পাইকারি বাজার রেয়াজউদ্দিন বাজার স্থানান্তরিত হচ্ছে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের নতুন স্টেশন সংলগ্ন পার্কিংয়ে।  চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উদ্যোগে অস্থায়ীভাবে সরানো হচ্ছে এ বাজার।  আগামিকাল বেলা ১১ টায় বাজারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন।  সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে সিএমপি সূত্রে জানা গেছে।  আজ বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) থেকেই অস্থায়ী এ বাজারে ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য স্থানান্তর করা শুরু করেছেন বলে রেয়াজউদ্দিন বাজার বণিক সমিতি জানিয়েছে।
সিএমপি সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরের নতুন রেলস্টেশন সংলগ্ন বিশাল গাড়ি পার্কিং এর মাঠটিতে এই বাজারটি স্থানান্তর করা হয়েছে।  এ জন্য বৃষ্টি-রোদেও যেন ব্যবসায়ীরা স্বাচ্ছন্দে বাজার পরিচালনা করতে পারেন সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।  এই অস্থায়ী বাজারটিতে একটি প্রবেশ গেইট ও একটি বাহির হওয়ার গেইট রাখা হয়েছে।  বাজারে আসা ক্রেতারা একপথে ঢুকে প্রয়োজনীয় বাজার করে অন্যদিকের পথ দিয়ে বের হতে পারবেন।  বাজারের প্রতিটি মোকামের সামনে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে ক্রেতাদের দাঁড়ানোর জন্য ঘর অংকন করে দেয়া হয়েছে।  এই বাজারে আসা ক্রেতা-বিক্রেতা সবাইকে মাস্ক ও হ্যান্ডগ্লাভস ব্যবহার করতে বাধ্যতামূলক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।  পুরো বাজারজুড়েই রাখা হয়েছে হাত ধোয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।  বাজারের ভেতরে পুলিশের একটি কন্ট্রোল রুম বসানো হয়েছে।  পুরো বাজারটিই পুলিশ পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষণে রাখবে বলে জানা গেছে।
সিএমপির কোতোয়ালী জোনের সহকারী কমিশনার নোবেল চাকমা জানিয়েছেন, মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে রেয়াজউদ্দিন বাজার রেলস্টেশন সংলগ্ন পার্কিংয়ে স্থানান্তর করা হয়েছে।  শুক্রবার এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।  পুরো বাজারটি সিএমপি পুলিশ পর্যবেক্ষণ করবে।  সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বাজার জুড়ে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সিএমপির পক্ষ থেকে রেলওয়ের গাড়ি পার্কিং এর জায়গাটি বাজার বসানোর জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছিল।  বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে সেখানে অস্থায়ী বাজার পরিচালনার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ভূ-সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান,  নতুন রেল স্টেশনের গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গাটি এক ইজারাদারের নামে বুকিং হলেও করোনা পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে বাজার বসানোর জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে।  তবে পরিস্থিতির উন্নতি হলে, এবং রেল চলাচল শুরু হলে তা আগের মতো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে দেয়ার শর্তে আমরা পাকিং এলাকাটি বাজারের জন্য দিয়েছি।

ডিসি/এসআইকে/আইএস