করোনায় মৃত্যু ছাড়াল সাড়ে ৪ হাজার, নতুন আক্রান্ত ২২০২

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার ছয় মাসের মাথায় সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা সাড়ে ৪ হাজার ছাড়িয়ে গেল।  স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এ ভাইরাসে আক্রান্ত আরও ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।  তাতে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ৫১৬ জন।  গত এক দিনে আরও ২ হাজার ২০২ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।  তাতে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ২৭ হাজার ৩৫৯ জনে।
আইইডিসিআরের হিসাবে, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি ও বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের মধ্যে আরও ৩ হাজার ২৯৮ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন।  এ নিয়ে সুস্থ রোগীর সংখ্যা ২ লাখ ২৪ হাজার ৫৭৩ জনে দাঁড়িয়েছে।
সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দেশে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ, তার ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে।  প্রায় এক মাস পর ২০ এপ্রিল মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছিল।  তা ৫০০ ছাড়ায় গত ২৫ মে। এরপর ১০ জুন মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়ায়।  দেড় হাজার ছাড়ায় ২২ জুন।
করোনা ভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর ৮৫ দিন পর ৫ জুলাই মৃতের সংখ্যা দুই হাজারের ঘর ছাড়িয়ে যায়।  এরপর তা আড়াই হাজারের ঘর ছাড়িয়ে যায় ১৭ জুলাই।  ২৮ জুলাই সেই সংখ্যা ৩ হাজার স্পর্শ করে; ১২ আগস্ট পৌঁছায় সাড়ে ৩ হাজারে।  তারপর ১৩ দিনের মাথায় ২৫ আগস্ট মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়িয়ে যায়।  এই তালিকায় আরও ৫০০ নাম যোগ হতে সেই ১৩ দিনই লাগল।  এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
বাংলাদেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ লাখ পেরিয়েছিল গত ২৬ আগস্ট। এর মধ্যে ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।
বিশ্বে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ২ কোটি ৭১ লাখ পেরিয়েছে; মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৮ লাখ ৮৩ হাজারে।  জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৫তম স্থানে।  তার মৃতের সংখ্যায় বাংলাদেশ রয়েছে ২৯তম অবস্থানে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৯৩টি ল্যাবে ১৫ হাজার ৪১২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।  এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ১৬ লাখ ৪৪ হাজার ৭২৪টি নমুনা।  ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯০ শতাংশ।  শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৬৮ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৩০ জন, নারী ৭ জন।  তাদের মধ্যে ৩১ জন হাসপাতালে এবং ৬ জন বাড়িতে মারা গেছেন।  তাদের মধ্যে ২১ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি।  ৯ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ২ জন করে মোট ৪ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ এবং ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ৩ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।
১৩ জন ঢাকা বিভাগের, ৬ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২ জন রাজশাহী বিভাগের, ৩ জন খুলনা বিভাগের, ৭ জন রংপুর বিভাগের, ৪ জন সিলেট বিভাগের এবং ১ জন করে মোট ২ জন বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।  দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৪ হাজার ৫১৬ জনের মধ্যে ৩ হাজার ৫৩৪ জনই পুরুষ এবং ৯৮২ জন নারী।
তাদের মধ্যে ২ হাজার ২৫৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি।  এছাড়া ১ হাজার ২৩১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৫৯৩ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ২৭৪ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১০৮ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৩৭ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ১৯ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।
এর মধ্যে ২ হাজার ১৮৪ জন ঢাকা বিভাগের, ৯৬৬ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২৯৯ জন রাজশাহী বিভাগের, ৩৭৮ জন খুলনা বিভাগের, ১৭৫ জন বরিশাল বিভাগের, ২০৫ জন সিলেট বিভাগের, ২১২ জন রংপুর বিভাগের এবং ৯৭ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ