একই শরীরে দুই বোন পড়ান অঙ্ক ও ইংরেজি!

বিচিত্র বিশ্ব ডেস্ক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
হাত-পা জোড়া লাগানো দুই বোন অ্যাবিগেইল আর ব্রিটনি।  দু’জন একই শরীরে যুক্ত থাকলেও তারা সম্পূর্ণ দুটো আলাদা মানুষ।  এমনকি তাদের আলাদা চিন্তা-ভাবনা, নেশা, খাদ্যাভ্যাস।  ১৯৯০ সালের ৭ মার্চ জার্মানির মিনেসোটায় জন্ম নেয়া এই বোনের ছোট থেকে বড় হওয়া ছিল গল্পের মতো।  তাদের অবিশ্বাস্য জীবনের গল্প তুলে ধরেছে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা।
অ্যাবিগেইল আর ব্রিটনির মা প্যাটি হেনসেল হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর জানতে পারেন তার শরীরে একটি ভ্রূণই বেড়ে উঠছে।  কিন্তু চিকিৎসকেরা তাকে যমজ সন্তান উপহার দেন।  দুটো শিশুই জোড়া লাগানো ছিল।  শুধু বাইরে থেকে তাদের শুধু মাথা দুটো আলাদা।  সাধারণত এ রকম সন্তান খুব বেশি দিন বাঁচতে পারে না।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, অস্ত্রোপচার করে তাদের আলাদা করে দেয়া হবে।  সে ক্ষেত্রে যে কোনো একজনকে বাঁচানো সম্ভব হবে।  তবে মায়ের মন তাতে সায় দেয়নি।  কারণ কোনো সন্তানকেই প্যাটি হারাতে চাননি।  তাই স্বামীর সঙ্গে মিনেসোটার প্রত্যন্ত ফার্মে দুই সন্তানকে বড় করতে থাকেন।
অ্যাবিগেইল লরেন হেনসেল এবং ব্রিটনি লি হেনসেলের বয়স এখন ২৯ বছর।  সমাজের সঙ্গে সংগ্রাম করে, নিজেদের সঙ্গে সংগ্রাম করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন তারা।  বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ডিগ্রি রয়েছে দু’জনের। অ্যাবি অঙ্ক এবং ব্রিটনি ইংরেজিতে স্নাতক।  শুধু তাই নয়, দু’জনেরই আলাদা ড্রাইভিং লাইসেন্স রয়েছে।  এই মুহূর্তে দু’জনেই স্কুলের শিক্ষক।
দু’জনের শরীর এক হলেও মস্তিষ্ক সম্পূর্ণ আলাদা।  তাই তাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছা, চিন্তা-ভাবনাও আলাদা।  এমনকি খাবারের প্রতি ভালবাসাও আলাদা।  হৃৎপিণ্ড, পিত্তাশয় এবং পাকস্থলী আলাদা।  তাই খিদেও আলাদা আলাদা সময়ে পায়।
বাকি সমস্ত কিছুই এক।  যেমন অন্ত্র একটাই, একটাই লিভার, দুটো কিডনি-ডিম্বাশয়।  আর তিনটে ফুসফুস রয়েছে তাদের।  ফলে বেশিরভাগ জৈবিক ক্রিয়াগুলো তাদের একই সঙ্গে ঘটে।  আরও বিস্ময়ের বিষয় হলো- একজনের জ্বর হলেই যে অন্যজনের জ্বর হবে তা কিন্তু নয়।  দু’জনের শরীর এক হলেও অসুখ-বিসুখ বেশির ভাগ সময়ই একসঙ্গে হয় না!

ডিসি/এসআইকে/চথোমা