সালমান শাহ’র মা, ভাই ও মামার বিরুদ্ধে সামিরার ১০ কোটি টাকার মামলা

বিনোদন ডেস্ক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
ঢাকাই সিনেমার ক্ষণজন্মা নায়ক সালমান শাহ।  মৃত্যুর ২৪ বছর পরও ফুরায়নি তার আবেদন।  তার মৃত্যুরহস্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে তদন্ত।  বেশ কয়েকটি আইন রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত শেষে রায় দিয়েছে আত্মহত্যা করেছিলেন সালমান।  তবে তার পরিবারের সদস্যরা তা প্রত্যাহার করে এসেছেন বরাবরই।  তারা দাবি করে আসছেন সালমান শাহকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে।  আর সেই খুনের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন সালমানের স্ত্রী সামিরা হক ও তার পরিবার।  কোনো কিছু প্রমাণ না হওয়া সত্বেও তাকে খুনি বলে বেড়াচ্ছেন, সালমান ভক্তদের উস্কানি দিচ্ছেন।  এতে করে নিজের ও পরিবারের মানহানি হয়েছে দাবি করে মানহানি মামলা করেছেন সামিরা।
তিনি জানান, সালমান শাহের মা, ছোট ভাই ও মামা আলমগীর কুমকুমের নামে ১০ কোটি টাকার মানহানি মামলা করা হয়েছে।
সামিরা বলেন, ভালোবেসে নিজের পরিবার ছেড়ে ইমনের (সালমান শাহ) হাত ধরে এক কাপড়ে বেরিয়ে এসেছিলাম।  সেই মানুষটা মারা যেতে না যেতেই আমাকে তার খুনের দায়ে অভিযুক্ত করা হলো।  মিথ্যে সব রুচিহীন, নোংরা, অশ্লীল গল্প সাজিয়ে আমাকে ও আমার পরিবারকে দেশবাসীর কাছে হেয় করা হয়েছে বারবার।  আর কতো সহ্য করা যায়।  সেজন্যই আমি আমার ও পরিবারের সম্মানের কথা ভেবে আইনের দ্বারস্থ হলাম।
মামলাটি কবে হয়েছে জানতে চাইলে সামিরা বলেন, বেশ কয়েক মাস আগেই এই মামলাটি করা হয়েছে।  এরপর থেকেই উনারা কিছুটা চুপ করে আছেন।  বারবার তদন্ত করে প্রমাণ হয়েছে যে ইমন আত্মহত্যা করেছে।  তারপরও কোনো প্রমাণ ছাড়া মনগড়া গল্প সাজিয়ে আমাকে ও আমার বাবার বাড়ি, শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের সম্মান হানি করা হচ্ছে।  কেন মেনে নেবো আমি?  অনেক সুযোগ ও সম্মান তাদের দেখানো হয়েছে।  এবার এসব থামা উচিত।
সামিরা আরো বলেন, তারা খুনের মামলা করেছেন।  তারা কিন্তু বাদী।  মামলায় জড়ালে আইনি জটিলতা থাকে যেখানে সেখানে মুখ খোলা নিয়ে।  কিন্তু তারা সেসব কিছুই মানেননি।  ২৪টা বছর ধরে একতরফা সব গল্প বলে বলে দেশের মানুষকে বিষিয়ে তুলেছেন আমার বিপক্ষে।  কেউ কিছু না জেনে না বুঝে না ভেবে আমাকে খুনি ভেবে যাচ্ছে।  গালি দিচ্ছে।  আমার পরিবারকেও নোংরা ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে ২৪টা বছর।  আমার বাবা, মা, বোনদেরও জড়ানো হয়েছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে সামিরা বলেন, আমি অল্প বয়সে বিধবা হয়েছিলাম।  আমার শাশুড়ি তো আমার পাশে ছিলেন না।  আমার শ্বশুর চেয়েছিলেন, কিন্তু উনার স্ত্রীর জন্য পারেননি।  মনের ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে আমাকে ছেলের খুনে জড়িয়েছিলেন৷ তারা যদি আমাকে আশ্রয় দিতেন আজকের অবস্থান আমার অন্যরকম হতে পারতো।  কিন্তু ২০-২২ বছরে একটা বিধবা মেয়ের কষ্ট তারা বুঝলেন না।  আমাকে খুনি বানাতে নেই এমন কিছু বাকি রাখেননি তারা।
সামিরা আরো জানান, সালমান শাহের স্ত্রী হিসেবে তার পাওনা বুঝে নেবেন তিনি।  সামিরা বলেন, গুলশানে আমার নামে ফ্ল্যাট কিনেছিলো ইমন।  ফেরারী ব্রান্ডের একটা গাড়ি দিয়েছিলো।  ওটার রেজিস্ট্রেশন আমার নামে এখনো।  এগুলো একেবারেই আমার সম্পত্তি।  এছাড়া কক্সবাজারে ২০ বিঘা জমি কিনেছিলো ইমন।  আরো অন্যান্য যা সম্পত্তি ছিলো ইসলামি বিধানমতে এখানে আমার ২৫ শতাংশ ভাগ রয়েছে।  যেহেতু আমাদের কোনো সন্তান নেই।  তাই বিধবা হিসেবে ২৫ ভাগ পাবো আমি।  সেগুলো কোথায়?  সব আমি বুঝে নেবো আইনিভাবেই।  এরইমধ্যে উকিলের সঙ্গে কথা বলেছি।
এই সম্পত্তি পেলে সালমান শাহ’র নামে মাদ্রাসা করতে চান সামিরা।  তিনি বলেন, সম্পত্তি হাতে এলে সব নিলামে তুলে ইমনের নামে মাদ্রাসা করবো ওর ভক্তদের সঙ্গে নিয়ে।  সম্ভব হলে ওর ভক্তদের মাঝে বিতরণ করে দেবো কিছু অর্থ।  আমি আর ছাড় দেবো না।  সালমান শাহের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতেই স্বামী খুনের দায় চাপানো হয়েছে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ