মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে আমার মানহানির জন্য সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি : কাজী আলতাফ

নিজস্ব প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম  >>>
নিজের বিরুদ্ধে মিথ্যা, মানহানিকর ও ভুয়া তথ্য সম্বলিত সংবাদ প্রকাশের জেরে জড়িত পক্ষগুলোর বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছেন আকবরশাহ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সবুজ পল্লী শ্রমজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড’র সভাপতি কাজী আলতাফ হোসেন।
রবিবার (১৪ মে) দৈনিক চট্টগ্রামে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এবং এ সংক্রান্ত মোবাইলে দেয়া বক্তব্যে এমনটা জানান তিনি।
কাজী আলতাফ হোসেন বলেন, নিবন্ধনহীন ভুয়া ও মিথ্যা ঠিকানা সম্বলিত ভূঁইফোঁর অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘নগর ভয়েস ডটকম (nagorvoice.com)’ এ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছি। এই ওয়েবসাইটে ‘চট্টগ্রামে আঃলীগ নেতা কাজী আলতাফের কা- সমিতির নামে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় কোটি টাকা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয় গতকাল ১৩ মে। সংবাদে আমাকে মূল শিরোনাম করে বলা হয়েছে- ‘অনুসন্ধানে এই নেতাসহ সংঘবদ্ধ ভয়ংকর প্রতারক চক্রের সন্ধান মিলেছে এই প্রতিবেদকের কাছে’, ‘এই আওয়ামী লীগ নেতা নামে-বেনামে এসব সমিতি করে প্রতিজন সদস্যের কাছ থেকে শেয়ার বিক্রির নামে প্রতি শেয়ার ১০০ টাকা করে নিম্নে ১০ শেয়ার নিতে হবে- এমন শর্তে সরল মনা অসহায় দিনমজুরদের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ’, ‘বাস্তুহারা সার্টিফিকেট দিয়ে জায়গা দেয়ার নামে ৩০-৫০ হাজার টাকা নেয়ারও অভিযোগ করেছেন এই প্রতারক চক্রটির বিরুদ্ধে’, ‘এই আওয়ামী লীগ নেতা কাজী আলতাফ প্রত্যাশা সমবায় সমিতি নামে আরও একটি সমিতি পরিচালনা করছেন। এই সমিতির মাধ্যমেও লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন’, ‘সমিতির মাধ্যমে আমাদেরকে জায়গা দেয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়েছে এবং ২-৩ বছর হয়ে গেলেও আজও জায়গা দেয়নি’, ‘সমিতির একাধিক সদস্যের অভিযোগ- সমিতির নামে আমাদের মতো অসহায় মানুষের টাকা আত্মসাৎকারীদের বিচার চাই’, ‘সমিতির সাথে সংশ্লিষ্ট নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, সমিতির টাকা দিয়ে আলতাফ সাহেব কিছু ম্যাকজিমা গাড়ি কিনে ভাড়ায় দিয়েছেন সেই গাড়িগুলোর টাকা কোথায় যায় আমি জানি না’ ইত্যাদি অভিযোগ আনা হয়।
সবুজ পল্লী শ্রমজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড’র সভাপতি আমি। এটি সরকারের সমবায় দপ্তর থেকে নিবন্ধিত একটি প্রতিষ্ঠান যার নম্বর-১২৪৫৯। এর বাইরে আমার আর কোনো সমিতির সাথে কোনো ধরণের সম্পৃক্ততা নেই। আমাদের সবুজ পল্লী শ্রমজীবী সমবায় সমিতির কোনো সদস্যকে কখনোই বাস্তুহারা সার্টিফিকেট দেয়ার নজীর নেই। সংবাদে আমাকে সংঘবদ্ধ ভয়ঙ্কর প্রতারক চক্র বলে অবহিত করা হয়েছে, আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। উপরোক্ত সংবাদটির প্রতিটি অভিযোগই মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সমিতির শেয়ার নিতে আমাদের কোনো শর্ত থাকে না। জায়গা দেয়ার নামে ৩০-৫০ হাজার টাকা নেয়ার অভিযোগটিও সম্পূর্ণ মিথ্যা। যারা বলেছেন তাদের টাকা ফেরত দেয়া হচ্ছে না তাও সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমাদের জানামতে কোনো সদস্য আবেদন করে টাকা পেতে ব্যর্থ হয়েছে এমন নজীর নেই। সমিতির টাকা দিয়ে ম্যাকজিমা কেনার তথ্যটিও সম্পূর্ণ মিথ্যা। সমিতির মাধ্যমে সহজ সরল অসহায় মানুষদের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাতের যে অভিযোগ তাও সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
সামগ্রিকভাবে একটি মিথ্যা, কারো দ্বারা প্ররোচিত হয়ে এবং আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে সংবাদটি প্রচার ও প্রকাশ করা হয়েছে বলে আমি মনে করি। আমি দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একটি থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে যথাযথ নিয়মে নিবন্ধন নিয়ে আমরা সবুজ পল্লী শ্রমজীবী সমবায় সমিতি পরিচালনা করছি। এই ধরণের মিথ্যা বানোয়াট ও প্ররোচনামূলক সংবাদ প্রচার ও প্রকাশ করার মাধ্যমে আমার ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন, আমাকে সমাজে হেয় করা হয়েছে বলে আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই বিষয়ে আমি ও আমরা পরবর্তী আইনী পদক্ষেপ নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
কাজী আলতাফ হোসেন বলেন, আমাকে সাংবাদিক পরিচয়ে ফোন করা মাহমুদ আরাফ মেহেদী নামের এক কথিত সাংবাদিককে ফোন করে তাদের সম্পাদকের নাম ও মোবাইল নম্বর চাই। সে আমাকে হাবিব রেজা নামের একজন সাংবাদিকের মোবাইল নম্বর দেয়। ওই নিউজপোর্টালের নিচে থাকা ঠিকানা চেরাগী পাহাড়ের লুসাই ভবনের ৩য় তলায় গিয়ে জানতে পারি এই নামে কোনো সংবাদ সংস্থা সেখানে নেই। পরে আমাকে দেয়া সেই সম্পাদকের মোবাইলে ফোন করে বিষয়টি জানাই। তিনি বলেন, আপনার সংবাদটিতো আমাদের সাইটে প্রকাশ পায়নি। তবুও আমি আপনার প্রতিবাদরিপিটা প্রচার করবো। ওই কথিত সাংবাদিক মেহেদি প্রদত্ত ই-মেইল ঠিকানাতেও রবিবার সংবাদের প্রতিবাদ ও মিথ্যা সংবাদটি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে পত্রটি প্রেরণ করেছি। যদি তারা আজকে সংবাদটি প্রত্যাহার না করে তাহলে যারা সংবাদটি প্রচার করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। তিনি বলেন, একজন চিহ্নিত পাহাড়খেকো, সন্ত্রাসীদের গডফাদার ও বিভিন্ন অবৈধ ও অনৈতিক কর্মকা-ের হোতা থেকে টাকা নিয়ে এমন মিথ্যা, উদ্ভট ও ভুয়া সংবাদটি প্রচার ও প্রকাশ করা হয়েছে। সংবাদটি প্রকাশের কয়েক মিনিটের মধ্যেই সেই চিহ্নিত সন্ত্রাসী-অপরাধী জনপ্রতিনিধি তার, তার অনুসারি ও তার আপন ভাইসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এবং বিভিন্নজনের হোয়াট্স অ্যাপ ও মেসেঞ্জারে প্রেরণ করেছে। যেহেতু সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে- আমি প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছি, তার প্রমাণ দিতে না পারলে আইনের মধ্য থেকে ব্যবস্থা নিব। আমি সমস্ত ডকুমেন্টস সংগ্রহ করেছি। এই চক্রটির বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি আমরা থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ একজন চিহ্নিত অপরাধী ও পাহাড়খেকোর শাস্তির দাবিতে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি পালন করেছি। মূলত তা বাধাগ্রস্ত করতে এমন মিথ্যাচারের পথ বেছে নিয়েছে ওই অপরাধী গডফাদার। দ্রুতই তার বিরুদ্ধে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিবো।

ডিসি/এসআইকে/এসএমআর