যে কারণে সেদিন পরীমণির অভিযোগ নেয়নি পুলিশ

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
চলচ্চিত্র নায়িকা পরীমণিকে ধর্ষণ চেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগটি অগ্রাধিকারভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।  রবিবার (১৩ জুন) রাতে জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পরীমণি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের স্ট্যাটাস ও অনির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন ডাকার পর পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে গণমাধ্যম।  একাধিক কর্মকর্তা জানান, পরীমণি থানায় গেলে তাকে ‘অসংলগ্ন আচরণ’ করতে দেখে প্রথমেই রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশের একটি দল।  সে রাতে পরীকে পরামর্শ দেওয়া হয়- সুস্থ হয়ে পরদিন তিনি যেন পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।  তবে পরদিন আর থানায় যাননি তিনি।
রবিবার (১৩ জুন) ছয়দিন পর পরীমণি তার ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মা সম্বোধন করে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে অভিযোগ করেন, এক ব্যক্তি তাকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করেছিল।  এ বিষয়ে তিনি চার দিন আগে বনানী থানায় গিয়ে অভিযোগ দিতে চাইলেও থানা পুলিশ তা নেয়নি।  এজন্য তিনি বিষয়টিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরীমণির এই স্ট্যাটাসের পরই সাংবাদিকরা ছুটে যান তার বাসায়, প্রশ্নের পর প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে পরী কখনো কেঁদেছেন, কখনও মৃত্যুর প্রসঙ্গটি এনেছেন।  এসময় তার পাশে ছিলেন পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী।  পরীর অশ্রুযুক্ত আলাপে তিনিও চোখ মুছেছেন অনেকবার।
রবিবার রাতে পুলিশের গুলশান বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, গত ৮ জুন রাত সাড়ে তিনটার দিকে পরীমণি বনানী থানায় গিয়েছিলেন।  থানায় গিয়ে তিনি দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে তার সঙ্গে অশোভনীয় আচরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করতে চান।  কিন্তু এসময় তিনি কিছুটা ‘অপ্রকৃতস্থ’ ছিলেন।  সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ বলতে না পারা এবং ‘এলোমোলো কথাবার্তা’ বলায় দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে সুস্থ হয়ে দিনের বেলায় আসতে বলেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, থানায় পরীমণির আচরণ ‘অসংলগ্ন’ হওয়ায় পুলিশের একটি দল তাকে সেখান থেকে এভার কেয়ার হাসপাতালে পৌঁছে দেয়।  পরের দিন তিনি আর থানায় যাননি।  এমনকি থানার ওসি বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কারও সঙ্গে কথা বলেননি।  তবে ওই রাতে তিনি কেন অসংলগ্ন আচরণ করেছিলেন সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পুলিশের সূত্রটি জানায়, নায়িকা পরীমণি যার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তার নাম নাসির ইউ মাহমুদ।  তিনি একজন ব্যবসায়ী ও উত্তরা ক্লাবের সাবেক সভাপতি।  বর্তমানে তিনি ঢাকা বোট ক্লাবের পরিচালক (কালচার অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।  এছাড়াও তিনি জাতীয় পার্টির (এরশাদ) প্রেসিডিয়াম সদস্যও।  অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে নাসির ইউ মাহমুদের দুটি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।  এক পর্যায়ে দুটি নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ