চট্টগ্রামের ৭১ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রামের ৭১টি ইটভাটা ১৮ দিনের মধ্যে বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।  সেই সাথে মোবাইল কোর্ট কত টাকা জরিমানা করেছে তওে উল্লেখ করতে বলা হয়েছে নির্দেশনায়।  এসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করার পাশাপাশি যেগুলোর লাইসেন্স রয়েছে সেগুলোর লাইসেন্স বাতিল করে এফিডেভিটের মাধ্যমে আদালতে উপস্থাপন করতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক এবং পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রামের পরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালতের আদেশ পুরোপুরি বাস্তবায়ন না করার প্রেক্ষিতে দায়েরকৃত আদালত অবমাননা মামলার শুনানি শেষে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি কামরুল হোসেন মোল্লার ডিভিশন বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।  এছাড়াও আদালতে পরিবেশ অধিদফতরের আইনজীবী সৈয়দ কামরুল হোসেন এবং চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের আইনজীবী ডিএজি নওরোজ রাসেল চৌধুরী আদালতের আদেশ সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন না করায় ক্ষমা প্রার্থনা করেন।  তারা জানান, ৩১ জানুয়ারি সকাল থেকে লাইসেন্সবিহীন ইটভাটা বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু হয়েছে।
আদালত অবমাননার এই অভিযোগ আনে ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ’ নামের একটি মানবাধিকার সংগঠন।  তারও আগে অবৈধ ইটভাটা পরিচালনার বিষয়টি উল্লেখ করে গত বছর ১৪ ডিসেম্বর রিট করে ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পীস ফর বাংলাদেশ’।  রিটের শুনানি শেষে তৎকালীন ডিভিশন বেঞ্চ ৭ দিনের মধ্যে অবৈধভাবে পরিচালিত চট্টগ্রামের সকল ইটভাটা বন্ধ করে আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেন।  সেই সঙ্গে কাঠ ও পাহাড়ের মাটিকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা ইটভাটার তালিকা দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন আদালতের নির্দেশ অনুসারে ইটভাটা বন্ধের কার্যক্রম শুরু করলেও লোহাগাড়া ও চন্দনাইশ উপজেলাসহ কিছু কিছু জায়গায় ইটভাটা বন্ধ না করে শুধুমাত্র জরিমানা ধার্য করে।  আদালতের নির্দেশনা অনুসারে পদক্ষেপ গ্রহণ না করার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিল্লুর রহমান এবং এসএম আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে বাদীপক্ষ আদালত অবমাননার অভিযোগ করে।  আবেদনে বলা হয়, জরিমানা করার পরও ইটভাটাগুলো আবারও চলছে।  ক্রমাগত পরিবেশ দূষণ ঘটিয়েই চলেছে।
শুনানিতে রিটকারী সংস্থার প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।  ইটভাটা প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ (সংশোধনী-২০১৯) এর ৪ ধারা অনুসারে কোনো ইটভাটা লাইসেন্স ছাড়া চলতে পারবে না।  চালালে আইনের ১৪ ধারা অনুসারে ২ বছর কারাদন্ডের বিধান রয়েছে।  কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার কারণে শত শত ইটভাটা চট্টগ্রামে পরিচালিত হচ্ছে।  যা পরিবেশের মারাত্মক দূষণ ঘটাচ্ছে।  তিনি বলেন, ১৮২টি ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে কাঠ ও ইট প্রস্তুতে পাহাড়ের মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে।  এটি সম্পূর্ণ বেআইনি।

ডিসি/এসআইকে/এমএস