চট্টগ্রাম চেম্বার মজুদদার লুটেরা মুনাফাখোর-ভেজাল খাদ্য উৎপাদকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় : সুজন

সংবাদ বিজ্ঞপ্তির >>>
করোনাভাইরাসকে কেন্দ্র করে মাস্ক মজুদদারদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন ‘জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই’ শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। তিনি নগরীর রেয়াজউদ্দিন বাজারস্থ হোটেল প্যারামাউন্ট ইন্টারন্যাশনাল এর সামনে করোনাভাইরাস সম্পর্কে জনসচেতনতামূলক সাবান দিয়ে হাত ধোয়া কর্মসূচি, মাস্ক ও প্রচারপত্র বিতরণ ও প্রচারণায় উপরোক্ত আহ্বান জানান।
এ সময় সুজন বলেন, চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া নতুন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে ‘বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর ও রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলসহ বিভিন্ন ভারী শিল্প কারখানা অবস্থিত। প্রতিদিন আমদানি রপ্তানির কারণে বিভিন্ন দেশের জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থান করে। তাছাড়া বাংলাদেশসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডে চীনা নাগরিকগণ সরাসরি জড়িত। তাই চট্টগ্রামের গুরুত্ব এবং নগরীতে বসবাসরত জনগণকে সচেতন করার জন্য নাগরিক উদ্যোগের পক্ষ থেকে আমরা দ্রুততার সাথে জনসচেতনতামূলক কর্মকান্ড শুরু করেছি। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, করোনাভাইরাসকে কেন্দ্র করে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী হঠাৎ করেই মাস্কের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অহেতুক জনগণের কাছ থেকে ইচ্ছেমতো গলাকাটা দাম আদায় করছে। এভাবে বিভিন্ন সংকটকে সামনে রেখে এমনকি পবিত্র রমজান মাসের চাহিদাকেও পুঁজি করে কতিপয় সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী বিভিন্ন অজুহাতে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি করে জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলে। যা মানবতা বিরোধী অপরাধের সামিল। তিনি আরো বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যখনই এ ধরনের কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তখন চট্টগ্রাম চেম্বার এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করে বিভিন্ন কলাকৌশলে এসব মজুদদার, লুটেরা, মুনাফাখোর ও ভেজাল খাদ্য উৎপাদকারীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দান করে। তারা মূলত চট্টগ্রাম চেম্বারকে নিজেদের ভাগ্য গড়ার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। যার ফলে অনেক পুরোনো ব্যবসায়ী এবং শিল্পপতিরা এ চেম্বার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তিনি কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীদের এহেন মনোবৃত্তি পরিহার করার আহবান জানান। তিনি সিটি কর্পোরেশনকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করার জন্য নিয়মিত আবর্জনা অপসারণ, মশার প্রজনন কেন্দ্র ধ্বংসসহ আগামি রমজান মাস পর্যন্ত বিশেষ পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি গ্রহণ করার অনুরোধ জানান। এছাড়াও বায়ু দূষণেও দুর্ভোগে আছেন নগরবাসী। সম্প্রতি বায়ু দূষণের কারণে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নিয়োজিত ঠিকাদারকে জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। তাই নগরবাসীর স্বাস্থ্য সেবা রক্ষার্থে নগরীর যেসব এলাকায় উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে সেসব এলাকায় নিয়মিত পানি ছিটানোরও বিনীত আবেদন জানান তিনি। তিনি করোনাভাইরাসকে অগ্রাধিকার বিবেচনায় নিয়ে বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা, সেবা সংস্থাসহ সামাজিক সংগঠনকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
সচেতনতামূলক সভা শেষে তিনি উপস্থিত প্যারামাউন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ডা. আবদুল করিমকে জীবানুনাশক তরল সাবান দিয়ে হাত ধুইয়ে কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পরবর্তীতে সিটি কর্পোরেশনের ময়লা আবর্জনা গাড়ির চালক এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীদেরও তরল সাবান দিয়ে হাত ধুইয়ে দেন এবং মাস্ক লাগিয়ে দেন। তিনি পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের ময়লা আবর্জনা বহন করার সময় তেরপলিন লাগানোর জন্য বিশেষ আহবান জানান। তিনি নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে বাজারের সম্মুখে উপস্থিত বিক্রেতাদেরও তরল সাবান দিয়ে হাত ধুইয়ে দেন এবং মাস্ক পড়িয়ে দেন। উপস্থিত বিক্রেতাদের তৈরি করা খোলা খাবার প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে দেন ও খাবার বিক্রয়ের সময় গ্লাভস ব্যবহার করার অনুরোধ জানান। বিক্রেতারা হাসিমুখে সুজনের অনুরোধে সম্মত হন এবং খোলা খাবার বিক্রি না করার অঙ্গীকার করেন।
ব্যতিক্রমী এ আয়োজনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ ডা. আবদুল করিম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মসিউর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি সালেহ আহমদ সুলেমান, ন্যাপ চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিটুল দাশ গুপ্ত, হাজী মো. ইলিয়াছ, আব্দুর রহমান মিয়া, এস এম আবু তাহের, সাইদুর রহমান চৌধুরী, নিজাম উদ্দিন, নাগরিক উদ্যোগের সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন, ক্যাব মহানগর কার্য নির্বাহী সদস্য রোটারেক্ট মো. ইমতিয়াজ আহমেদ, নগর যুবলীগ সদস্য আব্দুল আজিম, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সদস্য নুরুল কবির, আব্দুস সালাম মাসুম, শওকত হোসেন মুন্না, এএসএম জাহিদ হোসেন, জাহেদ আহমদ চৌধুরী, ডা. অঞ্জন কুমার দাশ, রফিকুল মান্নান জুয়েল, অনির্বাণ দাশ বাবু, সাইফুল্লাহ আনছারী, সফি আলম বাদশা, রকিবুল আলম সাজ্জী, আশিকুন্নবী চৌধুরী, লোকমান হোসেন, মহানগর নগর ছাত্রলীগ সভাপতি এম ইমরান আহমেদ ইমু, সহ-সভাপতি জয়নাল উদ্দিন জাহেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইরফানুল আলম জিকু, ফয়সাল সাজ্জাদ, ফরহাদ সায়েম, মো. কাইয়ুম, মনিরুল হক মুন্না, সৈয়দ ইবনে জামান ডায়মন্ড, মীর মোহাম্মদ ইমতিয়াজ, আব্দুল্লাহ আল নোমান সাইফ, মাহবুব আলম, মো. আলী মিঠু, আব্দুল মালেক, হাবিবুর রহমান, সালাউদ্দিন জিকু, কামরুল হাসান রানা প্রমুখ।

ডিসি/এসআইকে/আইএ